Pages

Wednesday, May 31, 2017

অরণ্যপ্রেমী এই মানুষটিকে লোকে ডাকতো পাগল

উজাড় হচ্ছে অ্যামাজনের অরণ্য।
আন্তোনিও ভিনচেনতে

প্রতিবেশীরা বলতো আন্তোনিও ভিনচেনতে একজন পাগল।

আর বলবেই না কেন? কোন সুস্থ মাথার মানুষ পকেটের পয়সা খরচ করে পতিত জমি কেনে? সেখানে একটি একটি করে গাছ বুনে সেখানে রীতিমত অরণ্য তৈরি করে?


"আমি যখন গাছের বীজ বুনতে শুরু করলাম তখন লোকে আমাকে বলেছিল. 'আপনি তো এই গাছের ফলও খেতে পারবেন না। ফল দিতে গাছের সময় লাগবে ২০ বছর," বিবিসির সাথে আলাপকালে বলছিলেন মি. ভিনচেনতে।

"আমি তাদেরকে বলেছিলাম, 'আমি এই বীজ বুনছি কারণ আমি এখন যে শস্য খাচ্ছি তা কেউ একজন কোন এক সময়ে বুনেছিল," তিনি বলছিলেন, "আর তাই আমার বোনা গাছের ফল কেউ না কেউ ভবিষ্যতে খেতে পাবে।"

নিজের তৈরি জঙ্গলের এক গাছের নীচে দাঁড়িয়ে রয়েছেন আন্তোনিও ভিনচেনতে।
মি. ভিনচেনতের বয়স এখন ৮৪ বছর। ব্রাজিলের সাও পাওলো শহরে থেকে ২০০ কি.মি. দূরে ১৯৭৩ সালে তিনি ৩০ হেক্টর পতিত জমি কেনেন।

 Do You Know? 
1 Hectare = 107639 Square Feet  
Vatican City is only 44 Hectare

অ্যামাজনের বন পরিষ্কার করে এই জমি তৈরি করা হয়েছিল।

আন্তোনিও ভিনচেনতে এসেছেন বড় কৃষিজীবী পরিবার থেকে।

ছেলেবেলায় তিনি দেখেছেন, কিভাবে অ্যামাজনের জঙ্গল কেটে সাফ করা হচ্ছে কৃষিকাজের জন্য।

আর গাছপালা না থাকার ফলে সেখানে কিভাবে জলের অভাব হচ্ছে।

সে সময়টাতে ব্রাজিলের সামরিক সরকার দেশে কৃষির প্রসার ঘটানোর জন্য অর্থ বরাদ্দ করছিল।

সেই টাকা এবং তার নিজের ব্যবসা বিক্রির টাকা জমিয়ে তিনি জমির বন্দোবস্ত নেন। জমির একপাশে নিজের জন্য তৈরি করেন একটি বাড়ি।

কিন্তু গাছ না কেটে তিনি জমিতে একটা একটা করে গাছ বোনা শুরু করেন।

সান-ফ্রান্সিসকো হাভিয়ে শহরের কাছে তার এই ব্যক্তিগত অরণ্যে এখন রয়েছে প্রায় ৫০,০০০ গাছ।

গত প্রায় ৩০ বছর মি. ভিনচেনতে যখন গাছ বুনে যাচ্ছিলেন সেই সময়টায় ব্রাজিলের সাও পাওলো রাজ্যে মোট ১৮৩,০০০ হেক্টর বনভূমি ধ্বংস করা হয়।

মি. ভিনচেনতের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে এক সময় যে জায়গা ছিল বিরানভূমি, সেখানে এখন অনেক গাছ।

অনেক ধরনের প্রাণীর নিরাপদ আশ্রয়স্থল এটি।

"অনেক ধরনের পাখী রয়েছে এখানে। রয়েছে কাঠবেরালি, গুই-সাপ," হাসতে হাসতে তিনি বলছিলেন, "অল্পবয়সী একটি জাগুয়ার বাঘও রয়েছে, যেটা মাঝেমধ্যেই আমার মুরগী ধরে নিয়ে যায়।"

জঙ্গল তৈরি হওয়ার পর সেখানে এখন জলের উৎসও তৈরি হয়েছে।

আগে মি. ভিনচেনতের অরণ্যে পানির উৎস ছিল একটি।

এখন সেখানে ২০টি জলের উৎস তৈরি হয়েছে।


Source : BBC Bangla

Tuesday, May 30, 2017

সাহাবী গাছ





এই বৃক্ষতলে বিশ্রাম নেন হযরত মোহাম্মদ (সা.)। দেড় হাজার বৎসর পূর্বে ছায়া প্রদানকারী বৃক্ষ এখনো দাঁড়িয়ে আছে সতেজ। শত কিলোমিটার ব্যাসার্ধে কোন গাছ না থাকলেও রূক্ষ মরুভূমিতে সতেজ সজীব এই বৃক্ষের টিকে থাকা বিস্ময়কর। হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর স্মৃতি ধন্য এই বৃক্ষটি টিকে আছে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে।

সাহাবী গাছ। ইংরেজিতে এ গাছকে বলা হয় The Blessed Tree। 
সময়টা ছিল ৫৮২ খ্রিস্টাব্দ। মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর বয়স তখন ১২ বছর। তিনি তার চাচা আবু তালিবের সঙ্গে ব্যবসার কারণে মক্কা থেকে তৎালীন শাম বা সিরিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। একসময় তাঁরা সিরিয়ার অদূরে জর্ডানে এসে উপস্থিত হন। এলাকাটি ছিল শত শত মাইলব্যাপী বিস্তৃত উত্তপ্ত বালুকাময় এক মরুভূমি। মহানবী (সা.) এবং তাঁর চাচা আবু তালিব এই মরুভূমি পাড়ি দেয়ার সময় ক্লান্ত হয়ে পড়েন। বিশ্রাম নেয়ার জন্য তাঁরা জায়গা খুঁজছিলেন। কিন্তু মরুভূমিতে বসার জায়গা কীভাবে পাবেন! চারদিকে শুধু ধূ-ধূ বালি আর বালি।
সেই মুহূর্তে দূরে একটি মৃতপ্রায় গাছ দেখতে পেলেন তাঁরা। মরুভূমির শুষ্ক এবং রুক্ষ পরিবেশের কারণে গাছটি ছিল লতাপাতাহীন শীর্ণ ও মৃতপ্রায়। আর কোন উপায় না পেয়ে দুইজন ঐ পাতাহীন গাছটির নিচেই বিশ্রামের জন্য বসে পড়েন। ঠিক তখনই তাদের ছায়া দিতে আল্লাহর নির্দেশে মৃতপ্রায় গাছটি সজীব হয়ে উঠে এবং গাছটির সমস্ত ডালপালা সবুজ পাতায় ভরে যায়। উল্লেখ্য, মহানবী (সা.) যখন পথ চলতেন, তখন আল্লাহর নির্দেশে মেঘমালা তাকে ছায়া দিত এবং বৃক্ষরাজি তার দিকে হেলে পড়ে ছায়া দিত।
জারজিস ওরফে বুহাইরা নামে একজন খ্রিস্টান পাদ্রি দূরে দাঁড়িয়ে সবকিছু দেখছিলেন। পরে তিনি তাদের বলেন, আমি কোনোদিন এই গাছের নিচে কাউকে বসতে দেখিনি। গাছটি ছিল পাতাহীন কিন্তু আজ গাছটি পাতায় পাতায় পরিপূর্ণ। এই ছেলেটির নাম কি? তখন চাচা আবু তালিব উত্তর দিলেন, মোহাম্মদ। পাদ্রী আবার জিজ্ঞাসা করলেন, বাবার নাম কি? -আব্দুল্লাহ! মাতার নাম? -আমিনা!
মহানবীকে (সা.) দেখে এবং তাঁর পরিচয় শুনে দূরদৃষ্টিসম্পন্ন পাদ্রী খুব সহজেই বুঝতে পারলেন যে, কে এই বালক। এই সেই বহু প্রতীক্ষিত শেষ নবী মোহাম্মদ। তখন চাচা আবু তালিবকে তিনি বললেন, আমি তাঁর সম্পর্কে বাইবেলে পড়েছি এবং আমি ঘোষণা দিচ্ছি, এই বালকটিই শেষ নবী।
গাছটি ১৫০০ বছর আগে যে অবস্থায় ছিল আজও সেই একই অবস্থায় আছে। সবুজ লতা-পাতায় ভরা। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় এই যে, গাছটি যেখানে দাঁড়িয়ে আছে, তার আশেপাশের কয়েকশ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে আর কোনো গাছ নেই। কারণ, এমন মরুদ্যানে কোনো গাছ বেঁচে থাকা সম্ভব নয়।
উত্তপ্ত বালুকাময় এই মরুভূমির বুকে দাঁড়িয়ে থেকে গাছটি আল্লাহর অসীম ক্ষমতার সাক্ষ্য দিয়ে যাচ্ছে। সেইসাথে আঁকড়ে ধরে রেখেছে মহানবী (সা.) এর স্মৃতি। জর্ডানের বাদশাহ আব্দুল্লাহ সর্বপ্রথম এই স্থানটিকে পবিত্র স্থান হিসেবে ঘোষণা দেন।

Monday, May 29, 2017

ইসলামে বৃক্ষরোপণ


বৃক্ষরোপণকে ইসলামে ইবাদত হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। যে গাছ লাগাবে এবং তা পরিচর্যা করবে, সে অনবরত পুণ্য পেতে থাকবে। মহানবী (সা.) বৃক্ষের শোভামণ্ডিত সুশোভিত পরিবেশ ভালোবাসতেন। তিনি ছিলেন প্রকৃত অর্থে একজন বৃক্ষপ্রেমী। জীবনে বহুসংখ্যক গাছ তিনি নিজ হাতে রোপণ করেছেন। অসংখ্য হাদিসে তিনি বৃক্ষরোপণে উদ্বুদ্ধ করেছেন তাঁর অনুসারীদের। বৃক্ষরোপণকারী মরে যাওয়ার পরও এর সওয়াব অনবরত পেতে থাকবে। সওয়াবের উদ্দেশে কোনো গাছের চারা রোপণ করলে যতদিন গাছটি থেকে উপকৃত হওয়া যাবে ততদিনই এর সওয়াব রোপণকারী পাবেন। ইসলামের আলোকে বৃক্ষরোপণ ও পরিচর্যা করা ইবাদতেরও একটি অংশ। নিজ হাতে বৃক্ষরোপণ করা রাসুলের সুন্নত। মহানবী (সা.) বলেন, তুমি যদি নিশ্চিতভাবে জান কিয়ামত এসে গেছে, তবুও তোমার হাতে কোনো গাছের চারা থাকলে তা রোপণ করবে।’ এ হাদিস থেকেই বোঝা যায় ইসলাম বৃক্ষরোপণকে কত গুরুত্ব দিয়েছে। বৃক্ষরোপণ যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি তা পরিচর্যা করাও অপরিহার্য। এ জন্য ইসলামে বৃক্ষের পরিচর্যার প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। 


কুরআনের ভাষ্য-আকাশ ও জমিনে যা কিছু আছে সবই আল্লাহর তসবিহ পাঠ করে। (সুরা হাশর-২৪)

এবং তৃণলতা ও বৃক্ষাদি সেজদারত আছে। (সুরা আর রাহমান-৬)

গাছ কাটলে গাছের জিকির বন্ধ হয়ে যায়। সে জিকিরের ধ্বনি আমরা নিজ কানে শুনি না। এ কারণেই আল্লাহ বলেছেন তোমরা তাদের তসবিহ শোনো না, বুঝও না।

হযরত আবু দরদা (রা.) ছিলেন রাসুল (সা.) এর খুব প্রিয় সাহাবি। দামেস্কে বসবাস করেন। তখন একদিন হাতে টিপে ইটমাটি ভাঙছেন। গাছ লাগাচ্ছেন বড় যত্ন করে। হেঁটে যাওয়া একজন আঁতকে উঠলেন। সাহাবির গাছ লাগানো দেখে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি এত যত্ন করে গাছ লাগাচ্ছেন কেন? আপনি নবীজীর ঘনিষ্ঠ সাহাবি! আবু দরদা বললেন, দয়া করে এমনটি বলবেন না। আমি খুব কাছ থেকে শুনেছি, নবী বলেন কোনো মুসলমান যদি একটি বৃক্ষ রোপণ করে কিংবা ফসল ফলায় এবং তা থেকে কোনো মানুষ জীব-জন্তু ও পশু-পাখি আহার করে তাহলে সবার আহারের অংশের বিনিময়ে আল্লাহ তাকে অশেষ সওয়াব দান করবেন।

 
হযরত আবু হুরাইরা রা. একদিন গাছ লাগাচ্ছিলেন। এমন সময় নবীজী পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন।নবীজী জিজ্ঞেস করলেন, আবু হুরাইরা! কী লাগাচ্ছো? তিনি বললেন, একটি চারা রোপণ করছি।নবীজী বললেন, আমি কি তোমাকে এর চেয়ে উত্তম রোপণের কথা বলে দেব? আবু হুরায়রাবললেন, আল্লাহর রাসূল! অবশ্যই বলুন। তখন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
"এর প্রতিটির বিনিময়ে জান্নাতে তোমার জন্য একটি করে গাছ লাগানো হবে।" সুনানে ইবনেমাজাহ, হাদীস ৩৮০৭

পরিবেশ নষ্ট না করতে মহানবীর হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, তোমরা অভিশপ্ত তিন প্রকার কাজ থেকে নিজেদের বিরত রাখো। ১.পানির উৎ
সসমূহে . রাস্তা-ঘাটে ৩. বৃক্ষের ছায়ায় মলমূত্র ত্যাগ করা। পরিবেশবান্ধব মহানবী জীবন গল্পে পাওয়া যায়, একজন লোক যখন অকারণে একটি গাছের ডাল ভাঙে তখন নবীজী (সা.) সে লোকটির চুল মৃদুভাবে টান দিয়ে বলেন, তুমি যেমন শরীরে আঘাত বা কেটে গেলে ব্যথা পাও, গাছের পাতা বা ডাল ছিঁড়লে গাছও তেমন ব্যথা পায়।

নবীজী আরও বলেছেন, বৃক্ষরোপণ করলে সদকায়ে জারিয়া সওয়াব দেওয়া হবে। (বুখারী ও মুসলিম)


Monday, May 22, 2017

বগুড়া গাছ উৎসবের সফল সমাপ্তি

গাছ পেয়ে নির্মল হাসি


গত ১৩ই মে বগুড়া গাছ উৎসবে ১৭০০ গাছ বিতরণের মাধ্যমে আমাদের মোট গাছের সংখ্যা দাঁড়ালো ৬১০০ যা আমাদের এই বছরের লক্ষ্যমাত্রা(৫০০০) ছাড়িয়ে গেছে, আশা করছি এই বছর আমরা ১০হাজার গাছ লাগাতে সক্ষম হবো। বগুড়া গাছ উৎসবের সংক্ষিপ্ত কিছু কথা তুলে ধরছি আপনাদের অবগতির জন্য।



১২ই মে রাত সাড়ে ১১ টার এস আর ট্র্যাভেলস চড়ে খুব সকালেই বগুড়া পৌঁছেছিলাম আমরা ৪জন সেখানে আমাদের Host তৌফিকুর রহমান তুষার এর বাসায় ফ্রেশ হয়ে সকালের নাস্তা শেষ করেই বন বিভাগের অফিসের উদ্দেশে রওনা হই গাছের জন্য কথা ছিল / টি  ভ্যান দিয়ে গাছ গুলো টি স্কুলে পৌঁছে দিবো, কিন্তু গাছ গুলো এতো বড় আর সুন্দর ছিল যে ভ্যান দিয়ে নেয়া কিছুটা কষ্টকর হবে ভেবে আমরা পিক-আপ ভাড়া করি

১৭০০ গাছ পিক-আপ উঠানোও ছিল বেশ সময়সাপেক্ষ ব্যপার আমরা গাছ গুলো পিক আপ এমন ভাবে গুছিয়ে রাখছিলাম যেন সব স্কুলই সব ধরনের গাছ পায়এইবারের উৎসবে গাছের ভিন্নতা ছিল অনেক বেশী। কাঁঠাল, জাম, কদবেল, মেহগনি, গামার, গর্জন, ডালিম, আমলকী, নিম, তেলসুর, জলপাই, বকুল, অর্জুন জাতের গাছ। বন বিভাগের কর্মীরা(/৬জন) খুব সুন্দর ভাবে আমাদের চাহিদা মতোই গাছগুলো পিক আপ উঠিয়ে দিয়েছেন খুব হাসিমুখে, এতো গরমের মধ্যেও
 


গাছ নিয়ে রওনা হতে আমাদের ১১ টা বেজে গিয়েছিলো প্রথমেই আমরা গেলাম রামেশ্বরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সেখানে প্রধান শিক্ষক জনাব মাহবুবুর রহমান স্যার সহ অন্যান্য শিক্ষকগণ খুবই আন্তরিকতার সহিত আমাদের স্বাগতম জানালেন। গাড়ি থেকে গাছ নামিয়ে স্কুলের বাচ্চাদের সহায়তায় একটি রুমে রাখি, কারণ প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান স্যার জানালেন উনি আমাদের সাথে সব গুলো স্কুলে যাবেন, উনার স্কুলে গাছ উৎসব করবেন পরদিন, উনার প্রস্তাবে আমরা যারপর নাই খুশি হলাম কারণ নতুন জায়গায় স্কুল গুলো খুঁজে পাওয়া আমাদের জন্য খুবই কষ্ট সাধ্য হতো। মাহবুবুর রহমান স্যারের অনুমতি নিয়ে আমরা উপস্থিত থেকে সেখানে তিনটি গাছ (নিম, আমলকী ও কদবেল) লাগিয়েছি স্যারদের সহায়তায়। এখানেই শেষ নয়, গাছের লাগিয়ে মাহবুবুর রহমান স্যার আপ্যায়ন করলেন বগুড়ার বিখ্যাত দই ও চিড়া দিয়ে(যদিও আগেই বলে রাখা ছিল কোন রকম আপ্যায়ন যেন না করা হয়)।



এরপর আমরা একে একে গাড়ির গাছ নিয়ে সাতচুয়া কামারচট্ট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মমিনখাদা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, হোসেনপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সব শেষে পদ্মপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এ গেলাম। সাতচুয়া কামারচট্ট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও আমরা উপস্থিত থেকে গাছ লাগিয়ে এসেছি। সবখানেই আমাদের সাথে ছিলেন প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান স্যার। আমরা কৃতজ্ঞ মাহবুবুর রহমান স্যারের নিকট, আমরা কৃতজ্ঞ সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিকট তাঁদের আন্তরিক ব্যবহারের জন্য।






পদ্মপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কথা বিশেষ ভাবে না বললেই নয়। এতো গুছানো আর স্মার্ট একটা স্কুল বাংলাদেশের বড় বড় শহরেও দেখা পাওয়া যাবেনা হয়তো। বলে রাখা ভালো এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক জনাব মোঃ মোস্তফা কামাল স্যার প্রধানমন্ত্রী পুরস্কার প্রাপ্ত। উনি স্কুলের স্কাউট টিমকে এতো সুন্দরভাবে প্রশিক্ষিত করেছেন যে আমরা তাদের সুশৃঙ্খল কর্মকাণ্ডে রীতিমত মুগ্ধ।

শুরুতেই স্যার সব শিক্ষার্থীদের অ্যাসেম্বলি লাইনের মতো দাড় করিয়ে দিলেন, তারপর একজন স্মার্ট স্কাউট গার্ল সম্পূর্ণ অ্যাসেম্বলিটা পরিচালনা করলো খুব সুন্দর ভাবে। স্যার গাছ লাগানোর উপকারিতা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু সংক্ষিপ্ত বক্তিতা দিলেন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে। তারপর জনাব মোঃ মোস্তফা কামাল স্যার আমাদের সবাইকে নিজেদের পরিচয় দিয়ে কিছু বলতে বললেন। আমরা সবাই নিজেদের পরিচয় দিয়ে গাছ লাগানো ও যত্ন নিতে তাদের উপদেশ(পড়ুন অনুরোধ)দিলাম। 

তারপর স্কাউট গার্ল অ্যাসেম্বলিকে বলল আমাদের ধন্যবাদ দিতে, তারা খুব সুন্দরভাবে তালে তালে করতালির মতো করে আমাদের ধন্যবাদ জানালো। এরপর স্যার তাদেরকে বললেন সারিবদ্ধ ভাবে একে একে এসে গাছ নিতে এবং গাছ নিয়ে এসে আবার লাইনে দাঁড়াতে। শিক্ষার্থীরা গাছ নিয়ে ঘুরে এসে আবার দাঁড়াচ্ছিল মনে হচ্ছিলো গাছের রেলগাড়ি চলছে। না দেখলে এই দৃশ্য দেখার আনন্দ বুঝানো যাবেনা। সবাই যখন গাছ নিয়ে লাইনে দাঁড়ালো আবার, ঐটাও ছিল দারুন একটা দৃশ্য, স্কুলের মাঠকে মনে হচ্ছিলো গাছের বাগান। আমাদের মনে হচ্ছিলো আমাদের সারাদিনের চেষ্টা সফল হয়েছে। আমরা কৃতজ্ঞ জনাব মোঃ মোস্তফা কামাল স্যারের নিকট, আমরা কৃতজ্ঞ পদ্মপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকগণ ও সকল শিক্ষার্থীদের নিকট। 

গাছ উৎসব শেষ করে যখন আমাদের Host তৌফিকুর রহমান তুষার এর বাসায় ফিরে বিশ্রাম করছিলাম তখনি পেলাম আমাদের এই উৎসবের সবচেয়ে বড় চমক।
তৌফিকুর রহমান তুষার আমাদের Super Active Member হিসেবে যুক্ত হবার ঘোষণা দিলো, সাথে তাঁর সহধর্মিণী(শবনম মুস্তারি) ও তিন বছরের ছেলে আজমাইন তৌফিক কে আমাদের Exclusive Member হিসেবে যুক্ত হবার ঘোষণা দিলো। Tree for Mankind পেলো নতুন তিনজন মেম্বার, সাথে একজন Guest Member দেব জ্যোতি আইচ মিশু।
এভাবেই আমাদের বগুড়া গাছ উৎসবের সফল সমাপ্তি হলো, বেড়ে গেলো পরবর্তী গাছ উৎসবের (১৫ই জুলাই, কুমিল্লা) জন্য অধীর প্রতীক্ষা।